Share this post:
Post Views: 178
এদিক ওদিক কথা না বাড়িয়ে একদম সরাসরি বলছি কি করলে আপনি দুর্দান্ত পদ্ম গাছ করতে পারবেন আর প্রচুর ফুল পাবেন। যা বলবো সেগুলো আপনার ধ্যান ধারণার সাথে মেলার চান্স খুবই কম, কারণ এইভাবে বিভিন্ন পরিবেশে গাছ করার মতো অভিজ্ঞতা খুব কম জনেরই আছে। “পদ্ম নিয়ে কিছু ভুল ধারনা” সিরিজের প্রথম পর্ব আজ।
১. সারাদিন খুব ভালো আলো পাবে বা দিনে ৩/৪ ঘণ্টা সরাসরি সূর্যের আলো পাবে এমন জায়গায় গাছ রাখুন। প্লাস্টিকের গামলায় গাছ করলে খোলা জায়গায় গাছ রাখার থেকে ৫০% গ্রীন নেট এর নিচে বা বড়ো কোনো বৃক্ষ জাতীয় গাছের নিচে গামলা রাখুন। গরমকালে দুপুরের রোদে প্লাস্টিক এর গামলা আগুনের মতো গরম হয়ে যায় , তখন গাছ নিয়ে ঝামেলায় পড়বেন।
গাছ যতো বেশি রোদ পাবে ততো ভালো , এটা সত্যি হলেও , গামলা গরম হয়ে গেলে গাছ ফুল দেওয়া বন্ধ করে দেবে, গ্রোথ তেমন হবে না।
মাটির বা সিমেন্টের গামলাতে এই সমস্যা নেই, তাই ওগুলো খোলা জায়গায় রাখতেই পারেন। একান্তই প্লাস্টিক এর গামলা খোলা জায়গায় রাখতে চাইলে একটা চটের বস্তা কাদা মাটি মাখিয়ে গামলার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে গামলা খোলা জায়গায় রাখতে পারেন , এতে গামলা কম গরম হবে।
ফ্ল্যাটের বারান্দাতেও সুন্দর গাছ হয় , ফুল ও হয়। যাঁরা বলে পদ্ম সম্পূর্ণ আউটডোর প্ল্যান্ট হয় তারা ইচ্ছা করে ভুল বলেন বা না জেনে বলেন। তবে ফ্ল্যাটের বারান্দায় পদ্ম গাছ করতে হলে ভালো ভ্যারাইটি নিয়ে করাই ভালো।ছোটো জায়গায় খুব ভালো ফুল দেবে এরকম ভ্যারাইটি নেবেন। সূর্যের আলো ছাড়া ইনডোরে গ্রো লাইটেও পদ্ম গাছ হয়।
পদ্ম গাছ খুব ছোটো যেমন কফি মগ থেকে শুরু করে চার ফুটের সিমেন্টের চৌবাচ্চা সব সাইজের জায়গাতে করা সম্ভব। তবে জায়গা বুঝে ভ্যারাইটি নিতে হবে। সব ভ্যারাইটি সব সাইজের জায়গায় ফুল দেয় না।
২. জল ছাড়াও পদ্ম গাছ হয় , ফুল ও দেয়। তাই যাঁরা ভাবেন পদ্ম গাছ করতে হলে পটে জল দাঁড়িয়ে থাকা দরকার তারা ভুল জানেন।
ভিজে মাটিতেও সুন্দর পদ্ম গাছ হয় , ফুল ও হয়। চন্দ্রমল্লিকা , গাঁদা , গোলাপ , জবা গাছ যেভাবে করেন সেইভাবেও পদ্ম গাছ করা যায় । তবে সব ভ্যারাইটি হয় না , মিডিয়াও একটু দেখেশুনে বানাতে হয়। কম সার দিয়ে মিডিয়া বানালে , বাইরে থেকে মাসে দুবার সঠিক পরিমাণে জৈব সার পুশ করে গেলে জল ছাড়াও পদ্ম গাছ করা সম্ভব।
জল ছাড়া পদ্ম গাছ করলে রাসায়নিক সার দেওয়া যাবে না , প্লাস্টিক এর গামলায় করা যাবে না। বারো ইঞ্চি মাটির গ্লাস টবে করবেন।
আমি নিজে এইভাবে গাছ করে দেখেছি। সুন্দর গাছ হয়েছে, ফুল ও হয়েছে।
৩. গামলার একদম নিচে দু ইঞ্চি সার এর লেয়ার, তার ওপর পাঁচ ইঞ্চি মাটি আর একদম ওপরে তিন ইঞ্চি জল ….. খুব খুব বাজে কম্বিনেশন এটা। এতে ট্রপিক্যাল বা হার্ডি কোনো গাছই ভালো করে হয় না।
সবথেকে ভালো গাছ হয় যদি লেয়ার না করেন। ১:৮ এই অনুপাতে কম্পোস্ট আর মাটি মিশিয়ে ভালো করে জল দিয়ে চটকে দশ দিন ফেলে রেখে তারপর সেই মাটিতে গাছ বসান। বিশ্বাস না হলে করে দেখুন!
আপনার গামলার গভীরতা যাই হোক না কেনো একদম ওপরে দু ইঞ্চি ছেড়ে রাখবেন জল রাখার জন্য আর বাকিটা এই মিশ্রণ দিয়ে ভরে দেবেন। দেখবেন সুন্দর গাছ বাড়ছে।
তবে এই পদ্ধতিতে গাছ করলে মাসে দুবার বাইরে থেকে গাছকে খাবার দিয়ে যেতে হবে।
৪. কন্টেনার কালচারে পদ্ম গাছ করলে রাসয়নিক সার যতোটা পারেন এড়িয়ে চলুন। শুধু জৈব উপায়ে গাছ করলে গাছের সহনশীলতা অনেক বেশি হয় , ফুলের সংখ্যা বেশি হয় , রং ভালো আসে।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে 95% জৈব সার আর 5% রাসয়নিক সার ব্যবহার করি। কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি অল্প হলেও রাসয়নিক সার না দিলে সেই টব ফাটানো গ্রোথ টা আসে না ।
৫. মাটি যতো পারেন চটকান তবে খুব নরম মাটিতে গাছ বসালে ভালো গাছ হবে না। চটকানোর সময় জল বেশি হয়ে গিয়ে মাটি খুব নরম হয়ে গেলে কদিন রোদে রেখে খানিকটা জল শুকিয়ে নিয়ে মাটি টানটান করে নিন , তারপর গাছ বসান । দেখবেন সুন্দর গাছ বাড়ছে।
মাটি টানটান থাকলে জল নোংরা কম হবে । গাছ সুন্দর গ্রোথ নেবে।
© গাছপাকা।
গাছ নিয়ে এইরকম মূল্যবান টিপস সরাসরি আপনার হোয়াটস্যাপ একাউন্টে পেতে আমাদের "গাছের পাঠশালায়" ভর্তি হতে পারেন। এই পাঠশালায় রোজ গাছ নিয়ে ছোটো ছোটো টিপস শেয়ার করা হয়। খুব সহজে ,কম যত্নে আর কম খরচে গাছ করা সম্ভব ! ভালো গাছ করাটা কোনো রকেট সাইন্স না , কিন্তু সঠিক যত্নটা জানা দরকার আর চর্চায় থাকাটা দরকার।

আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রুপ।
আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রুপ “গাছপাকার গাছের পাঠশালা” ।রোজ একটু একটু করে গাছ করা শিখতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

আমাদের ফেসবুক পেজ।
আমাদের ফেসবুক পেজ “গাছপাকা” । গাছ নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই পেজটি ফলো করতে পারেন।

আমাদের ফেসবুক গ্রুপ।
আমাদের ফেসবুক গ্রুপ “গাছের সমস্যার সমাধান ” । আপনার গাছের সমস্যায় পরামর্শ চাইতে এই গ্রুপে পোস্ট করুন।